জাতিপুঞ্জ ও জাতিসংঘ সম্পর্কে বিভিন্ন চাকুরির প্রশ্নসহ লেকচার PDF

 

জাতিপুঞ্জ ও জাতিসংঘ সম্পর্কে বিভিন্ন চাকুরির প্রশ্নসহ লেকচার PDF

জাতিপুঞ্জ

জাতিপুঞ্জ বা লিগ অব নেশনস  প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী একটি আন্তর্জাতিক আন্ত: সরকারী সংস্থা যা প্রতিষ্ঠা করা হয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯১৯ সালে প্যারিস শান্তি আলোচনার ফলস্বরূপ সংস্থাটির জন্ম। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। লীগ অব নেশনস এর বিভাগ ৩টি। ১. অ্যাসেম্বলি; ২. কাউন্সিল ও ৩. সচিবালয়। এ লীগ অব নেশনস এর প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২০ সালের ১৬ জানুয়ারি। এবং প্রথম অ্যাসেম্বলি অধিবেশন বসে ১৯২০ সালের ১৫ নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের ২৮তম প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন ১৪ দফার ভিত্তিতে জাতিপুঞ্জ গঠনের প্রস্তাব করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৪৬ সালের ২০ এপ্রিল সংস্থাটি বিলুপ্ত হয়। সংস্থাটি মাত্র ২৭ বছর টিকে ছিলো। সংস্থাটির উত্তরসূরি হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘের জন্ম হয়। জাতিপুঞ্জ গঠনের সময় ৪২টি দেশ উপস্থিত ছিল। জাতিপুঞ্জের প্রথম সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন ব্রিটিশ পদস্থ রাজকর্মচারী স্যার এরিক ড্রামন্ড। সংস্থাটির বিলুপ্তির সময় উপস্থিত সদস্য দেশ ছিল ৩৪টি। 

 উড্রো উইলসনের ১৪ দফার গুরুত্বপূর্ণ কিছু দফা-

দফা-১ : কোন গোপন চুক্তিকে সন্ধির শর্ত হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। 

দফা-২ : নিরপেক্ষ দেশের জাহাজ চলাচলের অবাধ অধিকার। 

দফা-৩ : আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শান্তি প্রিয় জাতিসমূহের সকল 

             প্রকার বাঁধার অবসান ঘটবে। 

দফা-৪ : প্রতিটি রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ শান্তির প্রয়োজনে যুদ্ধাস্ত্র রাখবে তবে 

যুদ্ধাস্ত্রের পরিমাণ হ্রাস করে আন্তর্জাতিক যুদ্ধের সম্ভাবনা দূর করবে। 

দফা-৫ : উপনিবেশবাসীর স্বার্থরক্ষা (স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষভাবে বিবেচনা)। 

দফা-১১ : বলকান রাষ্ট্রসমূহকে স্বাধীনতা দান করা হবে। 

দফা-১৪  : ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সকল রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও রাজ্যসীমার নিরাপত্তা রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে একটি বিশ্ব সংস্থা গঠন করতে হবে। 

 জাতিসংঘ (টঘওঞঊউ ঘঅঞওঙঘঝ)-


জাতিসংঘ গঠনের পটভূমি 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংস লীলা বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দারুণভাবে ভাবিয়ে তোলে। তাই বিশ্বের নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করে। জাতিসংঘ সনদ গৃহীত হয় ১৯৪৫ সালের ২৬ জুন। জাতিসংঘ নামটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট (১ জানুয়ারি ১৯৪২)। জাতিসংঘের (আয়ের উৎস সদস্য দেশগুলো চাঁদা) বৃহত্তম চাঁদা প্রধানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র (বাজেটের ২২ শতাংশ)। জাতিসংঘের বাজেট ঘোষিত হয় দুই বছর পরপর। জাতিসংঘে বাংলাদেশের চাঁদার পরিমাণ বাজেটের ০.০১%। 

 জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক ইতিহাস-


লন্ডন ঘোষণা: ১২ জুন ১৯৪১ সাল। জার্মান-ব্রিটেনকে আক্রমণ করার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের ৯টি প্রবাসী সরকার পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য লন্ডনের জেমস প্রাসাদে যে ঘোষণা দেয় তাই লন্ডন ঘোষণা। এটি জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ।

আটলান্টিক সনদ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বোত্তর পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট আটলান্টিক মহাসাগরের ব্রিটিশ রণতরী ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলসে’ ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিই “আটলান্টিক সনদ” নামে পরিচিত। ইংল্যান্ডের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকলিন ডি রুজভেল্ট এ সনদে স্বাক্ষর করেন। 

ওয়াশিংটন ঘোষণা: ১৯৪২ সালের ১লা জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল, সোভিয়েত এবং চীনের প্রতিনিধি সহ ওয়াশিংটনে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এজন্য এ বৈঠককে ‘জাতিসংঘ ঘোষণা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই ঘোষণায় ‘জাতিসংঘ’ নামটি সর্বপ্রথম অফিসিয়ালভাবে ব্যবহৃত হয়।


মস্কো সম্মেলন: ১৯-৩০ অক্টোবর, ১৯৪৩ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মস্কোয় এক বৈঠকে মিলিত হয় ৭ দফা চুক্তি প্রণয়ন করে। 


তেহরান সম্মেলন: যুদ্ধকালীন সময়ে মিত্র বাহিনীর প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। ১৯৪৩ সালে আমিরিকা, যুক্তরাজ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন তেহরান শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হয়। 


ডাম্বারটন ওকস সম্মেলন: ২১ আগস্ট-২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ডাম্বারটন ওকস ভবনে জাতিসংঘের রূপরেখা প্রণীত হয়। 


ইয়াল্টা সম্মেলন: ১১ ফেব্রæয়ারি ১৯৪৫ সাল। ইউক্রেনের ইয়াল্টায় ডাম্বারটন সম্মেলনের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত। এই সম্মেলনে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫টি দেশকে ভেটো ক্ষমতা প্রদান করা হয়। 


সানফ্রান্সিসকো সম্মেলন: ১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন সানফ্রান্সিসকো সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ জুন ১৯৪৫ সালে ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা ১১১ ধারা সম্বলিত জাতিসংঘ সনদ স্বাক্ষর করেন। ১৯৪৫ সালের ১৫ অক্টোবর ৫১তম দেশ হিসেবে পোল্যান্ড জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষর করে। ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ সনদ কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস পালিত হয়। 


 জাতিসংঘের সদস্য-

বর্তমানে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ১৯৩ টি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ৫টি। সেগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন। এ ৫টি দেশের রয়েছে ভেটো প্রদানের ক্ষমতা। নিরাপত্তা পরিষদে ১০টি অস্থায়ী সদস্য রয়েছে, যারা দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক দেশ ফিলিস্তিন ও ভ্যাটিকান সিটি। জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষুদ্র সদস্য রাষ্ট্র মোনাকো। উল্লেখ্য, তাইওয়ান জাতিসংঘের পূর্বে সদস্য ছিলো কিন্তু বর্তমানে সদস্য নেই। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য। 


জাতিসংঘের পতাকা -

জাতিসংঘের পতাকায় আছে হালকা নীলের উপর সাদা রঙের জাতিসংঘের প্রতীক। জাতিসংঘের প্রতীকের মাঝখানে পৃথিবীর মানচিত্র, দুইপাশে দুইটি জলপাই গাছের পাতা। জলপাই গাছ শান্তির প্রতীক। ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ পতাকা অনুমোদন পায়। 

মানবাধিকার কমিশন: 


১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা দেয়া হয় এবং একটি সনদ স্বাক্ষরিত হয়। সনদের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়। সনদে ৪৮টি রাষ্ট্র পক্ষে ভোট দেয় এবং ৮টি রাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে। প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পালিত হয়। 



জাতিসংঘের সদর দপ্তর 

জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত। এর স্থপতি হলো ওয়ালেনস কে হ্যারিসন। জাতিসংঘের ইউরোপীয় সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব মি. ট্রিগভেলী ১৯৪৯ সালের ২৪ অক্টোবর এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে। চারটি ভবন নিয়ে সদর দপ্তর বিস্তৃত। 



জাতিসংঘের ভাষা 

জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষা হলো (৬টি) আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ এবং স্পেনীয় ভাষা। জাতিসংঘ সচিবালয়ে যে দুটি ভাষা ব্যবহৃত হয় তা হলো ইংরেজি ও ফরাসি। জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষাগুলোর মধ্যে ইংরেজি ৫২টি সদস্য দেশে সরকারি ভাষা। ফরাসি হলো ২৯টি দেশের, আরবি ২২টি দেশের, স্পেনীয় ২০টি দেশের, রুশ ৪টি দেশের এবং চীনা ভাষা ২টি দেশের সরকারি ভাষা। 


জাতিসংঘের সঙ্গীত

জাতিসংঘের কোন আনুষ্ঠানিক সঙ্গীত নেই। ইংরেজ কবি ডবিøউ এইচ অডেন এর একটি লেখায় স্পেনের সঙ্গীতজ্ঞ পাবলো ক্যাসালস সুরারোপ করেন। জাতিসংঘের সম্মানে সুরারোপ করা এই সঙ্গীতটি ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ দিবসে পরিবেশন করা হয়। ডবিøউ এইচ অডেন- এর লেখাটি ছিল জাতিসংঘকে ঘিরে। এর প্রথম লাইন হলো- ঐুসস ঞড় ঃযব টহরঃবফ ঘধঃরড়হং। 


জাতিসংঘের উদ্দেশ্য-


জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হলো যুদ্ধ বন্ধ এবং যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এছাড়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে যে কোন সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে যুদ্ধের সম্ভাবনা রহিত করা; বিশ্বে সুষম উন্নয়ন এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করা। 


 

  জাতিসংঘের মূলসংস্থা -


জাতিসংঘের মূলসংস্থা ৬টি। যথা- 

০১. সাধারণ পরিষদ 

০২. নিরাপত্তা পরিষদ  

০৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ 

০৪. অছি পরিষদ 

০৫. আন্তর্জাতিক আদালত 

০৬. সচিবালয় 


 সাধারণ পরিষদ-


জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ , জাতিসংঘের প্রধান ৬টি শাখার মধ্যে অন্যতম। এটিই একমাত্র পরিষদ যেখানে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত সকল রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও প্রতিনিধিত্বের অধিকারী হিসেবে অবস্থান করে। ১০ জানুয়ারি, ১৯৪৬ থেকে সাধারণ পরিষদ কাজ করছে। সাধারণ পরিষদ প্রতি বছর ২১ মার্চ বর্ণবৈষম্যবাদ বিরোধী দিবস পালন করে। কোরীয় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সাধারণ পরিষদে টহরঃরহম ঋড়ৎ চবধপব জবংড়ষঁঃরড়হ গৃহীত হয়। ২০১৯ সালে এ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। 


সাধারণ পরিষদের অধিবেশন : প্রতি বৎসর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার জাতিসংঘ আলাপ আলোচনার মূল সভা বা সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বসে। সাধারণ পরিষদের (সহসভাপতি ২১ জন) অধিবেশনে প্রত্যেকটি দেশ ৫ জন সদস্য পাঠাতে পারে। এ পরিষদের (মূল কমিটির সংখ্যা ৭টি) প্রথম সভাপতি ছিলেন বেলজিয়ামের পল হেনরি স্মার্ক। এ পরিষদের (প্রথম অধিবেশন হয় ওয়েস্ট মিনিস্টার হল, লন্ডন) সভাপতির মেয়াদ ১ বছর। এ পর্যন্ত ৩ জন নারী এ পরিষদে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫৩ সালের অষ্টম এ পরিষদের প্রথম মুসলিম মহিলা সভাপতি ছিলেন বাহরাইনের সায়খা হায়া বিনতে রশিদ আল খলিফা। সাধারণত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এ অধিবেশন স্থায়ী হয়। প্রয়োজনবোধে একাধিকবারও অধিবেশন বসতে পারে। প্রত্যেক অধিবেশনের শুরুতে অধিকাংশ সদস্যের ভোটে একজন সভাপতি বার্ষিক ভিত্তিতে নিযুক্ত হন। নয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ষষ্ঠ অধিবেশনে গৃহীত হয়। 

সাধারণ পরিষদের কার্যাবলি


জাতিসংঘ সনদের ৯ নং অনুচ্ছেদ থেকে ২২ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিষয়াবলির আলোকে এই পরিষদের গঠন ক্ষমতা কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। 


জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিতর্ক সভা হিসেবে বিশ্ব মতামত প্রকাশ করতে পারে।

বিশ্বশান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষা করা সাধারণ পরিষদের কাজ। 

আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন করতে পারে সাধারণ পরিষদ।

জাতিসংঘের অন্যান্য শাখার কার্যের অনুসন্ধান ও নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যান্য শাখাগুলো সাধারণ পরিষদের নিকট বার্ষিক প্রতিবেদন প্রদান করে। 

নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে যে কোনো রাষ্ট্রকে নতুন সদস্যরূপে গ্রহণ করতে পারে।


  নিরাপত্তা পরিষদ -

জাতিসংঘ সনদের ২৩নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদ (জাতিসংঘের কার্যনির্বাহী পরিষদ) ১৫টি সদস্যরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত হবে। প্রথমে ১১ জন সদস্য নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ গঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে ৫ জন স্থায়ী সদস্য, যাদের ভেটো প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে এবং ৬ জন অস্থায়ী সদস্য। স্থায়ী সদস্যগণ হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া)।


১৯৬৩ সালে জাতিসংঘ সনদের ২৩ ধারা সংশোধন করে অস্থায়ী সদস্য ৬ থেকে ১০ এ উন্নীত করে এ পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১৫ করা হয়। যা কার্যকর করা হয় ১৯৬৫ সালে। নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান অস্থায়ী সদস্য সংখ্যা ১০টি। যথা- ভেনিজুয়েলা, মিশর, অ্যাঙ্গোলা, সেনেগাল, মালয়েশিয়া, উরুগুয়ে, নিউজিল্যান্ড, জাপান, স্পেন ও ইউক্রেন। 


২০১৯-২০ সালের জন্য নির্বাচিত অস্থায়ী দেশগুলো হলো- বেলজিয়াম, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০২০-২১ সালের জন্য নির্বাচিত দেশগুলো হলো- এস্তোনিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এ্যান্ড গ্রনাডাইন্স, তিউনিশিয়া, ভিয়েতনাম, নাইজার। 


অঞ্চলভিত্তিতে নি¤েœাক্ত পর্যায়ে অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়- এশিয়ার দেশসমূহ থেকে ২টি; আফ্রিকার দেশসমূহ হতে ৩টি; ল্যাটিন আমেরিকার দেশসমূহ থেকে ২টি; পূর্ব ইউরোপীয় দেশসমূহ হতে ১টি; পশ্চিম ইউরোপীয় এবং অন্যান্য দেশসমূহ হতে ২টি। 

অস্থায়ী সদস্যরা দু বছরের জন্য সাধারণ পরিষদ কর্তৃক দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে নির্বাচিত হয় এবং বিদায়ী সদস্য পুনরায় নির্বাচিত হতে পারে না। ১৯৭১ সালে তাইওয়ানের পরিবর্তে চীন এবং ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে গেলে রাশিয়া স্থায়ী সদস্যের মর্যাদা পায়। ১০ জন অস্থায়ী সদস্য ৪টি ভৌগোলিক অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হয়। প্রতি বছর ৫ জন নতুন অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয় এবং ৫ জন অস্থায়ী সদস্য বিদায় নেয়। উল্লেখ্য জাপান নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার দাবিদার। নিরাপত্তা পরিষদে সর্বোচ্চ অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়েছে জাপান (১১ বার)।



ভেটো (ঠঊঞঙ)

ল্যাটিন শব্দ ভেটো-এর অর্থ হলো ‘আমি এটা মানি না’। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং ফ্রান্স- এই পাঁচটি দেশকে নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার দেয়া হয় ১৯৪৫ সালের ইয়াল্টা সম্মেলনে। 


 

নিরাপত্তা পরিষদের কাজ

নতুন সদস্য গ্রহণে সুপারিশ।

জাতিসংঘের ২৪ নং ধারা অনুসারে এ পরিষদকে শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা মূলক কাজ দেয়া হয়। 

সনদের ৩৯-৫১ নং ধারা অনুসারে এ পরিষদকে বিশ্ব শান্তি সংরক্ষণে প্রতিরোধ ও শক্তি প্রয়োগমূলক দায়িত্ব দেয়া হয়। 

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রীকরণের কাজ করে থাকে। 

৪৭ ধারা অনুসারে মিলিটারী স্টাফ কমিটি গঠনের ক্ষমতা। 




 অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ-

জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ জাতিসংঘের একটি প্রধান অঙ্গসংস্থা। এর বর্তমান সদস্য ৫৪টি। এর সদর দপ্তর জাতিসংঘের কনফারেন্স বিল্ডিং-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য সংখ্যা ১৮টি। এটা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য জাতিসংঘের বিশেষায়িত ১৪টি সংস্থা, তাদের কার্যকরী কমিশন এবং ৫টি আঞ্চলিক কমিশনের মধ্যে সমন্বয় সাধনে কাজ করে। 


সম্পূর্ণ লেকচারটি ডাউনলোড করতে  পারেন সরাসরি গুগল ড্রাইভ থেকে:

 জাতিপুঞ্জ ও জাতিসংঘ সম্পর্কে বিভিন্ন চাকুরির প্রশ্নসহ লেকচার PDF


অন্যান্য পিডিএফ লেকচারের লিংক:

১৯৪৭-বর্তমান পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের সাহিত্যকর্ম PDF

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস PDF


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post